নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া এলাকার একটি সরকারি রাস্তা দখল করে গোয়ালঘর নির্মাণ করেছে প্রভাবশালী। সেই রাস্তাতে গরু পালনের কারণে রাস্তা দিয়ে চলাচলের জন্য ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকাবাসী। এদিকে সিটি কর্পোরেশন বলছে ম্যাজিস্ট্রেট সংকটের কারণে তারা উচ্ছেদ করতে পারছেন না।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রাজশাহী নগরীর ৫নং ওয়ার্ডের রাজপাড়া পশ্চিমপাড়া এলকার মূল প্রবেশ পথের ড্রেনের উপরে নির্মান করা হয়েছে গোয়াল ঘর। স্থানীয় প্রভাবশালী মৃৃত. ভিকু শেখের ছেলে হকসেদ আলী রাস্তাটি দখল করে রেখেছেন। রাতের আঁধারে রাস্তাটি নিজেদের দখলে নিয়ে গোয়ালঘর নির্মাণ করে এবং গরু-বাছুর পালন করতে থাকেন। গরু-বাছুরের মল-মূত্রে রাস্তাটিসহ আশেপাশে অস্বাস্থ্যকর ও দূর্গন্ধযুক্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
ইতোপূর্বে গত ২০২০ সালে এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সিটি কর্পোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট দুই দফা উক্ত গোয়ালঘর ভেঙ্গে দিয়ে সাত দিনের মধ্যে তা অপসারণের নির্দেশ দিয়ে গেলেও জবর দখলকারীগণ রাস্তার উক্ত জায়গা পুনরায় দখল ও গোয়ালঘর নির্মাণ করে নেয়।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করে বলেন, গন্ধে এই পথ দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। তবে প্রভাবশালী হবার কারণে তারা মুখ খুলতে পারছেন না। এমনকি এ নিয়ে তারা কাউন্সসিলর ও মেয়র বরাবর অভিযোগ করেও কোন লাভ হয় নি। কেউ এ নিয়ে কথা বললে তারা তাকে মারধরও করে। তাই বাধ্য হয়ে সব কিছু মেনে ভোগান্তি নিয়ে এ পথ দিয়ে চলাচল করতে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা কামরান হাফিজ বলেন, এই সড়কের জমিটা আমার মা মোসাঃ জামিরা খানম ১৯৭৮ সালে ২৫৬২৭ নং দলিল মূলে ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৪.৬ ফুট প্রস্থের রাস্তা তৎকালীন রাজশাহী পৌরসভার অনুরোধে নিজ স্বার্থস্বত্ব ত্যাগ করেন। উক্ত রাস্তা বহুদিন যাবৎ অত্র এলাকার জনসাধারণ ব্যবহার করে আসছে।
তিনি আরও বলেন, মেয়র মহোদয় যখন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনকে নতুন আঙ্গিকে সাজাচ্ছেন, সেখানে রাস্তা জবর দখল করে গরুর গোয়ালঘর তৈরী করে রাস্তায় জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে প্রভাবশালী। এই রাস্তার জন্য আমরা জমি দান করেছি। আমি চাই রাস্তাতে কোন ধরনের গরুর গোয়াল থাকবে না। সবাই ভোগান্তি ছাড়াই এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করবে। এজন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাব এ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার শিশির আহম্মেদ বলেন, এই জমি নিয়ে দুই গ্রুপের অনেক দিনের দ্বন্দ¦ চলে আসছে। এটি নিয়ে আমরা দুইবার এই জমির অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে এসেছি। বর্তমানেও একটি অভিযোগ আছে। তবে আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় এখন কোন ধরণের আইন প্রয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না। ম্যাজিস্টেট্র আসলে তখন এগুলো নিয়ে অভিযান চালানো হবে।
এবিষয় দখলদার হকসেদ আলী বলেন, আমাদের এই জমির সব কাগজ আছে। সেগুলো সিটি কর্পোরেশনে দেয়া আছে। আগে কেন দুইবার উচ্ছেদ করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উচ্ছেদের সময় আমাদের কোন সময় দেয়া হয়নি। আর আমাদের জমির কাগজ সম্পর্কে ধারণা ছিলো না। পরে খোঁজ নিয়ে দেখেছি এই জমি আমাদের। নিজস্ব জমিতেই গোয়ালঘর নির্মাণ করেছি বলে দাবি করেন তিনি।