রাজশাহীর মহানগরীর সাবেক ডিবি এডিসি ড. রুহুল আমীনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হলেও এখনো তার বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে দায়ের করা মামলাগুলো সত্ত্বেও তিনি নোয়াখালী পুলিশ লাইনে বহাল রয়েছেন, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
ভুক্তভোগীদের ভাষ্যমতে, ড. রুহুল আমীন জামায়াত ও বিএনপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চালানোর পাশাপাশি বেআইনি গ্রেফতার, নির্যাতন ও ঘুষ গ্রহণের মতো গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত।
একাধিক সূত্র জানায়, রাজশাহী মহানগর শিবিরের সাবেক সভাপতি হাফেজ খায়রুল ইসলামের বিয়ের আসর থেকে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়, যার ফলে বিয়েটি ভেঙে যায়। পরে তাদের রিমান্ডে নিয়ে তিন লাখ টাকা ঘুষ দাবি করা হয়। ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে সবাইকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়।
এছাড়া, জামায়াত ও বিএনপির ব্যানার প্রিন্টের অভিযোগে চিত্রলেখা প্রিন্টিং প্রেসের মালিক নজরুল ইসলামকে মারধর করে পঙ্গু করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একই ঘটনায় ডিজাইনার সাকিবসহ দু’জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।
রাজশাহীর একটি হাটে খাবার খেতে যাওয়া পাঁচজন মাদ্রাসা শিক্ষককে জামায়াতের নেতা বানিয়ে গ্রেফতার করা হয়। একইভাবে, রাজশাহী মহানগর জামায়াতের সাবেক আমির আতাউর রহমানের স্ত্রীর জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের ওপর পুলিশি হামলা চালিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে রাজশাহী মহানগর শিবিরের সাবেক সেক্রেটারি সিফাত আলমকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। রাজশাহী কোর্ট চত্বরে হাজিরা দিতে আসা জামায়াত ও শিবির নেতাদের গ্রেফতারের চেষ্টার সময় ১০ জন নিরীহ ব্যক্তিকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় ভিডিও ধারণ করতে গেলে তিনজন সাংবাদিককেও আটক করা হয়।
ভুক্তভোগীদের আরও অভিযোগ, শিবিরের কর্মী সন্দেহে শিমুল নামের এক যুবকের কানে টানা ১৫টি চড় মেরে তাকে বধির করে দেওয়া হয়। এছাড়া, শুধুমাত্র দাড়ি রাখার কারণে সাধারণ ছাত্রদের গ্রেফতার ও কারাগারে পাঠানোর অভিযোগও রয়েছে।
ড. রুহুল আমীনের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সাধারণ জনগণ।