নিজস্ব প্রতিবেদক
সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্যতম স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী যন্ত্রকৌশল বিভাগের তানভীর ফুয়াদ রুমী এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সামিউর রহমানের অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর প্রেক্ষিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বর্তমান প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম ও শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে জমে থাকা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১৩ দফা দাবিসংবলিত স্মারকলিপি উত্থাপন করা হয়। ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে জমা দেওয়া এই স্মারকলিপিতে নিম্নোক্ত দাবিদাওয়া জানানো হয়।
১. যেকোন পরীক্ষার খাতায় কোডিং সিস্টেম এর মাধ্যমে একজন পরীক্ষক যেন কোন ক্রমেই পরীক্ষার্থীর পরিচয় জানতে না পারেন এবং নিরপেক্ষ নম্বর প্রদান করেন তা নিশ্চিত করা।
২. শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফলাফল সর্বসম্মুখে প্রকাশ না করে প্রত্যেকের নিজস্ব আইডি / মেইলে প্রদান করা।
৩. সম্ভাব্য মানসিক ভাবে ভঙ্গুর শিক্ষার্থীদের জন্য কাউন্সিলিং এর ব্যবস্থা করা এবং সেটা অবশ্যই শিক্ষক ব্যতীত কোন তৃতীয় পক্ষ হতে হবে।
৪. শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিক্ষকদের শিক্ষাদান এবং ছাত্র শিক্ষক সম্পর্ক বিষয়ে নিয়মিত মূল্যায়ন গ্রহন এবং তার উপর ভিত্তি করে শিক্ষাসুলভ পরিবেশ তৈরির জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন।
৫. যে কোন কোর্সে ৪০% এর বেশী পরীক্ষার্থী ব্যাকলগ (৪০% এর কম নম্বর) পেলে পরীক্ষার খাতা পুনরায় মূল্যায়ন/ পুন:পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহন করা।
৬. প্রত্যেক পরীক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করার পর তাদের পরীক্ষার খাতা দেখানোর ব্যবস্থা করা।
৭. ব্যাকলগ পরীক্ষা গ্রহন পদ্ধতি আরো সহজতর করা। প্রতি ২ সেমিস্টার পরে ৩ টি ব্যাকলগ পরীক্ষার বদলে ৫ টি ব্যাকলগ পরীক্ষা প্রদান এর সুযোগ দেয়া এবং যেকোন ব্যাকলগ পরীক্ষার স্লট এ পূর্ববর্তী যেকোন ব্যাকলগ এর জন্য রেজিস্ট্রেশন এর সুযোগ প্রদান করা।
৮. পরীক্ষা শেষ হবার ২ সপ্তাহের মাঝে ফলাফল প্রকাশ করা এবং বিজোড় সেমিস্টার এর ৫ সপ্তাহের মাঝে ব্যাকলগ পরীক্ষা গ্রহন সম্পন্ন করা।
৯. ক্যাম্পাস এরিয়ায় কোন ছাত্রের যেকোন অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ভাবে সকল ব্যবস্থা গ্রহন এবং মৃতের পরিবারকে আর্থিক অনুদান প্রদান।
১০. অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ছাত্রকে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে এককালীন ও মাসিক আর্থিক অনুদান প্রদান।
১১. গবেষণা ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ কে অনুপ্রেরণা দেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্থিক অনুদান এর ব্যবস্থা করা।
১২. শিক্ষার্থীদের রুয়েটে শিক্ষাজীবন শেষে ক্লিয়ারেন্স সংক্রান্ত জটিলতা লাঘব করা। কেন্দ্রীয়ভাবে একধাপে ক্লিয়ারেন্স সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করা।
১৩. রুয়েট মেডিকেল সেন্টারে ২৪ ঘন্টা চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করা। কোন ক্ষেত্রে রুয়েট মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসার অপ্রতুলতার কারণে কোন শিক্ষার্থী কে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি করার প্রয়োজন হলে রুয়েট প্রশাসন এর হস্তক্ষেপে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা।
রুয়েটের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন আরো স্বাচ্ছন্দপূর্ণ ও মসৃণ করার লক্ষে উপর্যুক্ত দাবীসমূহ বাস্তবায়নের দাবীতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা প্রত্যক্ষ সমর্থন প্রকাশ করে এবং স্মারকলিপি জমা দেওয়ার সময় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ ইশফাক ইয়াসসির ইপু ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।